সমস্যা -১ :- সারা দিনই বিভিন্ন জাগায় বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন কম্পিউটার (বিভিন্ন ওএস ) নিয়ে কাজ করতে হয়। এক কম্পিউটারে করা কাজগুলি অন্য কম্পিউটারে সময় সুযোগমত করতে হলে ঐ কাজগুলিকে পেন ড্রাইভে কপি করে সঙ্গে নিয়ে চলতে হয়, কাট-পেষ্ট করে কাজ করে আবার পেন-ড্রাইভে কাট-পেষ্ট করতে হয়। কাট-পেষ্টে না জড়িয়ে কিছু করার উপায় নেই? পেন ড্রাইভ বাহিত হয়ে এক কম্পিউটারের ভাইরাস অন্য কম্পিউটারকে সংক্রামিত করা আশংকা সব সময়ই থাকছে। তা হলে উপায়?
সমস্যা -২ :- পাসওয়ার্ড মনে রাখতে রাখতে পাগলের অবস্থা - ফেসবুক, টুইটার, ইমেল, ব্লগ, এটিএম, ব্যাঙ্ক একাউন্ট, পিসি-ল্যাপটপ – কত পাসওয়ার্ড মনে রাখবো। আবার পাসওয়ার্ড নরম দুর্বল হলে চলবে না, শক্ত-পোক্ত হতে হবে। তাই পাসওয়ার্ড হতে হবে (ক) লম্বা (খ) জটিল এবং (গ) ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ের জন্য ভিন্ন ভিন্ন পাসওয়ার্ড (ঘ) পাসওয়ার্ডগুলি মাঝে মাঝে পরিবর্তন করতে হয়। এমন কোন ব্যবস্থা হতে পারে না যাতে পাসওয়ার্ডের যত পরিবর্তন হবে তা নিজে নিজে আপডেট হয়ে যাবে, সহজেই পাস ওয়ার্ডগুলি হাতের কাছে থাকবে।
সমস্যা -৩ :- বিভিন্ন ডকুমেন্টস আমরা হার্ড ডিস্কের ডুকুমেন্টস ফোল্ডারে রাখি। হার্ড ডিস্ক করাপ্ট হয়ে গেলে সমস্যার আর শেষ থাকেব না। তাহলে উপায় কি ?
এই সমস্ত সমস্যাগুলির সমাধান রয়েছে ড্রপবক্স এপ্লিকেশনে।
ড্রপবক্স কি?
এটা একটা প্রায় ফ্রি সার্ভিস ( 2GB পর্যন্ত ফ্রি এবং চাঁদা দিয়ে 100GB পর্যন্ত জায়গা পাওয়া যায় ) যা দিয়ে সমস্ত ফোটো, ডকুমেন্টস এবং ভিডিও নেট সংযোগ সম্পন্ন যে কোন কম্পিউটারে নিয়ে যাওয়া যায়। যে কোন ফাইল ড্রপবক্সে সেভ করলে তা তৎক্ষণাৎ ব্যবহারকারীর সমস্ত কম্পিউটার, মোবাইল ফোন এবং এমন কি ড্রপবক্স ওয়েব সাইটে সেভ হয়ে যায়। এর অর্থ হল প্রথম কম্পিউটারে কাজ আরম্ভ করে শেষ কম্পিউটারে এসে সমাপ্ত করা যাবে, বারে বারে নিজের নামে ইমেল করতে হবে না।
ড্রপবক্সের সবচেয়ে বড়ো সুবিধা হচ্ছে- এর উইন্ডোজ ভার্সান, লিনাক্স ভার্সন, ম্যাক ভার্সন এমনকি মোবাইল ভার্সনও আছে। ড্রপবক্স ব্যবহারকারীর ডেক্সটপেই চুপচাপ বসে থাকে। নেট কানেকটেড হবার সাথে সাথেই সিনক্রোনাইজ হয়ে যায়। ব্যবহারকারী দিনের বিভিন্ন সময়ে যতোগুলো পিসি,তা যত রকমের ও এস হোক না কেন, ব্যবহার করেন- সবগুলিকে ড্রপবক্স সিনক্রোনাইজ করে নেবে। পেনড্রাইভ হারিয়ে যাওয়া বা ভুলে সাথে না রাখা বা ভাইরাসের আশঙ্কা- ইত্যাদি কোন ঝামেলাই নেই।
নূন্যতম প্রয়োজনীয়তা -
ড্রপবক্স ইনষ্টল এবং ব্যবহার করতে একটা ইন্টারনেট সংযোগ এবং একটা ইমেইল একাউন্ট অবশ্যই লাগবে ।
ড্রপ বক্স ইন্সটল করা -
ক) ড্রপবক্স রিপোজিটারী তৈরী করা -
টার্মিনাল খুলে রুট থেকে
cat <<EOF>
/etc/yum.repos.d
/dropbox.repo
> [Dropbox]
> name=Dropbox Repository
> EOF
খ
)
yum install nautilus-dropbox
এবারে এপ্লিকেশনস থেকে ড্রপবক্স আইকন ক্লিক করে
অনস্ক্রিনের ইন্সট্রাকশনগুলো অনুসরন করতে হবে
,
যেমন চাইবে সে ভাবে নাম
,
ইমেইল এ্যাড্রেস
,
পাসওয়ার্ড ইত্যাদি দিতে হবে
,
ইন্সটলেশন শেষ হলে
ব্যবহারকারীর হোম ফোল্ডারের ভীতরে ড্রপবক্স ফোল্ডার তৈরী হয়ে যাবে
,
ড্রপবক্সের ভীতরে ফোটো এবং পাবলিক ফোল্ডার দুটি বাই ডিফল্ট পাওয়া যাবে।
সিস্টেম ট্রে তে ড্রপবক্সের একটি আইকন চলে আসবে।
ড্রপবক্স ফোল্ডার -
কম্পিউটারে ড্রপবক্স ইন্সটল করলে ড্রপবক্স ফোল্ডার তৈরী হয়ে যায়। এটা আর পাঁচটা ফোল্ডারের মতোই দেখতে হলেও একটু পার্থক্য আছে। এই ফোল্ডারে যে ফাইলগুলি সেভ করা হবে তা ব্যবহারকারীর সব কটি কম্পিউটার, মোবাইল ফোন যেখানে ড্রপবক্স ইন্সটল করা আছে , সেভ হয়ে যাবে। ড্রপবক্সে দু-রকমের আইকন থাকে-
সবুজ বৃত্তে টিক চিহ্ন – ড্রপ বক্সের সব ফাইলগুলি আপডেট হয়ে গেছে | |
নীল বৃত্তে তীর চিহ্ন - ড্রপ বক্সের ফাইলগুলি আপডেট হচ্ছে। |
ড্রপবক্সে ফাইল যোগ করা -
ক) ফাইলটা টেনে এনে ড্রপবক্সে ফেলতে হবে।
খ) নীল আইকন মানে ড্রপবক্সে ফাইলটা অন্য কম্পিউটার এবং ড্রপবক্স ওয়েবসাইটে সেভ হচ্ছে। ড্রপ বক্সের যে কোন ফাইলে পরিবর্তন করলেই এটা জানান দেবে এবং অন্যান্য কম্পিউটারে আপডেটেড হবে। ড্রপবক্সের কোন ফাইল বা ফোল্ডারে রাইট ক্লিক করলে একটা মেন্যু পাওয়া যাবে যার দ্বারা নীচের কাজগুলি করা যাবে -
ক) একটা ফোল্ডার শেয়ার করা যাবে যেখানে বন্ধু-বান্ধব-আত্মীয় স্বজনদের আমন্ত্রণ জানানো যাবে। বিষয়টা এমন যেন ওদের কম্পিউটারে কোন ফাইল সরাসরি সেভ করা হচ্ছে।
খ) আগের সংস্করণগুলি দেখা যাবে, ফাইলের পরিবর্তনের তথ্য দেখা যাবে। ফাইলের ইতিপূর্বের ভারসানে ফেরা যাবে।
গ) ড্রপবক্স ওয়েবসাইটে ব্রাউজ করা যাবে ... ড্রপবক্স ওয়েবসাইটে ফাইল দেখা যাবে।
ঘ) Copy Public Link ব্যবহারকারীর পাবলিক ফোল্ডারের যে কোন ফাইলের জন্য একটা লিংক তৈরী করবে, এই লিংক ব্যবহারবারীর ইচ্ছামত যে কোন ব্যক্তিকে ঐ ফাইল দেখার জন্য পাঠানো যাবে।
ড্রপবক্স ট্রে / মেন্যুবার আইকন -
ডেস্কটপের নিচের দিকে ডান কোনায় এটা থাকে, এখান থেকে ড্রপবক্সের স্ট্যাটাস এবং সেটিং চেক করা যায়। ফাইল ফোল্ডারে উপরে যেমন সবুজ, নীল এবং লাল আইকন আসে ট্রে আইকনেও ঠিক একই ঘটনা ঘটে। এই আইকনে রাইট-ক্লিক করলে -
ক) ড্রপবক্স ফোল্ডার, ড্রপবক্স ওয়েবসাইট অথবা ড্রপবক্স হেল্প সেন্টার খোলা যায় ।
খ) কোন ফাইলগুলি সম্প্রতি পরিবর্তিত হয়েছে দেখা যায়।
ঘ) ড্রপবক্স এই ফাইলগুলি আপডেট করতে কত সময় নেবে তার অনুমান পাওয়া যায়।
ঙ) ব্যবহার কারীর সংযোগ, ড্রপবক্স ফোল্ডার লোকেশন এবং আর কিছুর প্রেফারেন্স পরিবর্তন করা যায়।
কয়রকটা ফটো বা ডকুমেন্টস ড্রপবক্সে টেনে ফেলে দেখা যাক না। এর পর ড্রপবক্সের ওয়েবসাইট https://www.dropbox.com -এ ঢুকলে পরে দেখা যাবে ব্যবহারকারীর ফাইলগুলি ব্যবহারকারীর জন্য অপেক্ষা করছে।
পাবলিক ফোল্ডার ড্রপবক্সের ভীতরে ফাইলকে শেয়ার করতে দেয়। এই ফোল্ডারে যে কোন ফাইল রাখলে তার একটা নিজস্ব ইন্টারনেট লিংক তৌরী হয়ে যায় যার দ্বারা এটা সকলের সাথে - এমন কি যারা ড্রপবক্স ব্যবহার করে না তাদের সাথেও শেয়ার করা যায়। এমন কি ব্যবহারকারীর কম্পিউটার বন্ধ থাকলেও এটা কাজ করে।
এটা করার জন্য বিভিন্ন ধাপগুলি -
১) পাবলিক ফোল্ডারে একটা ফাইল ফেলতে হবে। এখানে ফোল্ডার চলবে না।
২) এই ফাইলের উপরে রাইট-ক্লিক করে Dropbox > Copy Public Link. বাছতে হবে। এতে ফাইলের একটা ইন্টার নেট লিংক তৈরী হয়ে যাবে যাতে এটা অন্য যে কোন জায়গায় নিয়ে যাওয়া যায়। এই লিংকটা ই-মেল, তাৎক্ষণিক মেসেজ কনভারসেশান, ব্লগ ইত্যাদিতে ব্যবহার করা যায়।
ড্রপবক্স ব্যবহারকারীর স্টোর থেকে কোন ফাইল ডিলিট হবারও ইনফরমেশান এক মাস ট্র্যাক করে রাখে এবং ব্যবহারকারীর ফাইনাল কনফার্মেশানের আগ পর্যন্ত কোন ফাইলই পারমানেনন্টলি ডিলিট করে না। ডিলিটেড ফাইলগুলোকে সিলেক্ট করে এবং ড্রপডাউন এ্যারো সিলেক্ট করে আনডিলিটেড লিংক বেছে নেওয়া যায়। এখান থেকে ব্যবহারকারীকে আরেকটি পেজ এ ডিরেক্টেড করে নিয়ে যাওয়া হবে যেখানে ব্যবহারকারী সেই ফাইল রিস্টোরিং এর ব্যাপারে ডিটেইল পাবে। সেক্ষেত্রে শুধু মাত্র আনডিলিট বাটনে ক্লিক করতে হবে। ব্যাস, তাহলেই ফাইলগুলো রিষ্টোর হয়ে যাবে।
পাশ ওয়ার্ড সমস্যা সমাধান -
বিভিন্ন ধরণের পাসওয়ার্ড আর্কাইভ করে রাখতে ' কী পাস' এপ্লিকেশনটি ইন্সটল করে নিতে হবে। কীপাস এর আর্কাইভটিকে শুধু ব্যবহারকারীর ড্রপবক্সে সেভ করে রাখতে হবে। তাতেই ব্যবহারকারীর সমস্ত পাসওয়ার্ডের যত পরিবর্তন হবে তা নিজে নিজে আপডেট হয়ে যাবে।
No comments:
Post a Comment